বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রম শৃঙ্খলায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সেই লক্ষ্যে বিয়ের ক্ষেত্রে নির্ধারিত কর প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মুখপাত্র আবু নাছের এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, প্রথম বিয়ের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা কর হলেও দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বিয়ের ক্ষেত্রে কর নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৫ হাজার, ২০ হাজার এবং ৫০ হাজার টাকা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির বিবাহ নিবন্ধন কর হিসেবে আদর্শ কর তফসিল, ২০১৬ এর ১০ (৪)-এর ১৫২ নম্বর আইন অনুযায়ী প্রথম বিয়ে বা স্ত্রীর মৃত্যুর পর প্রথম বিয়ের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা, প্রথম স্ত্রীর জীবদ্দশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা, প্রথম দুই স্ত্রীর জীবদ্দশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে তৃতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা, প্রথম তিন স্ত্রীর জীবদ্দশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে চতুর্থ বিয়ের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা এবং প্রথম স্ত্রী যদি মানসিক ভারসাম্যহীন অথবা বন্ধ্যা হয় (সেক্ষেত্রে ক, খ, গ ও ঘ এ বর্ণিত কর প্রযোজ্য হবে না) তবে পরবর্তী বিয়ের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা বিবাহ নিবন্ধন কর করপোরেশনের রাজস্বে জমা দিতে হবে।
এরই ধারাবাহিকতায় করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলশ্রুতিতে, করপোরেশনের ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড গত জানুয়ারি মাসে ২৮টি বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রমের জন্য ২ হাজার ৮ শত টাকা রাজস্ব আদায় করেছে।
বর্তমানে এ কার্যক্রম ম্যানুয়ালি পরিচালনা করা হলেও শিগগির তা অনলাইনে নিয়ে আসতে ইতোমধ্যে করপোরেশন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ কাজ বাস্তবায়ন হলে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও বিবাহ নিবন্ধন কর পরিশোধ করা যাবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দাবি, এর ফলে বিবাহ নিবন্ধন সংক্রান্ত বিষয়াবলি যেমন শৃঙ্খলিত ও তথ্য সমৃদ্ধ হবে তেমনি ভবিষ্যতে ভিত্তি হিসেবে ব্যবহারে বিশেষত বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে অন্যান্য সংস্থাকে সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি সরবরাহ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণেও সহায়ক হবে। একইসঙ্গে বাড়বে সংস্থার রাজস্ব আদায়।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, “বিবাহ বিচ্ছেদ সবার কাছে অপ্রত্যাশিত একটি বিষয়। কিন্তু তারপরও বাস্তবতার নিরিখে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে থাকে। বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত তথ্যাদি করপোরেশনে এলেও বিবাহ নিবন্ধন সংক্রান্ত কোনো তথ্য আমাদের কাছে থাকে না। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী এটা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও বিবাহ সংক্রান্ত তথ্য থাকলে বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে অনেক সময় তা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। পাশাপাশি অনেক সময় বিজ্ঞ আদালত ও বিভিন্ন সংস্থা হতে এ সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়। ফলে, আমাদের এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সামষ্টিকভাবে বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রম একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার আওতায় আসবে।”
Posted by Newsi24